শান্ত-মারিয়াম ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজির আর্কিটেকচার বিভাগের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ২০১৭-র শীতকালীন সেমিস্টারের ৩ দিন ব্যাপি শিক্ষা প্রকল্প প্রদর্শনী। সোমবার ৪ঠা জুন সকাল ১১ টায় আর্কিটেকচার বিভাগের বিভাগীয় প্রধান স্থপতি সেলিনা আফরোজা উদ্বোধনী সম্ভাষণে বলেন, ‘একাডেমিক শিক্ষা ও হাতেকলমের শিক্ষার সমন্বয়েই ঘটে বাস্তব শিক্ষার পরিস্ফুটন, আশাকরি আমাদের শিক্ষার্থীরা এই প্রদর্শনীর মাধ্যমে এই দুই এর সমন্বয়ে খুঁজে পাবে সৃষ্টিশীল শিক্ষার আস্বাদন’। এই বিভাগের সকল শিক্ষকমন্ডলী তথা স্থপতিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সুমাইয়া বিনতে মামুন, রুবানা সাদিয়া আলম, ফাহাদ ইসলাম, মাহবুবা আফরোজ জিনিয়া, মেহরিন হোসেইন, রিয়াজুল হাসান, মাহমুদুল হাসনাত ও তন্ময় চ্যাটার্জি। ১ম বর্ষ হতে ৫ম বর্ষ পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের ডিজাইন স্টুডিও, গ্রাফিক আর্ট, স্কাল্পচার, ফটোগ্রাফি, কম্পিউটার এইডেড ডিজাইন, ল্যান্ডস্কেপ ডিজাইন, ইন্টেরিয়র ডিজাইন সহ অন্যান্য ব্যবহারিক কোর্সের শিক্ষা প্রকল্পগুলো এই অনুষ্ঠানে তুলে ধরা হয়। প্রদর্শনীতে স্থাপত্যরীতি, ভাবনা এবং কর্মের বহিঃপ্রকাশ যেমন ছিল, তেমনি খুঁজে গেছে শিক্ষার্থীদের ক্রম উন্মেষের স্বাক্ষর। প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা যেমন দ্বিমাত্রিক ও ত্রিমাত্রিক আকার-আকৃতি বিন্যস্ত করেছে, তেমন চিনতে শিখছে রং ও তাদের বৈশিষ্ট্য। আবার তারাই প্রায়োগিক বস্তুর নকশা করছে সুচারুরুপে।
দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের যেমন কুয়েলিং, কোলাজ করতে দেখা যায় তেমনি সুদক্ষ হাতে তারা কালি ও কলমে ফুটিয়ে তুলতে চেয়েছে স্থাপত্য নকশা গুলো। তাদের নকশা করা পেশাদারদের আবাস কিংবা প্রাথমিক বিদ্যালয় যেমন তাদের চিন্তা-ভাবনার কথা প্রকাশ করছে, তেমনি প্রায়োগিক ও ব্যবহার্য নকশার বিষয়টিকেও ব্যক্ত করছে। তবে তাদের ভাস্কর্যগুলোর অভিব্যক্তিই বলে দেয় নিয়ত ব্যবহারিক জ্ঞান ছাড়াও তাদের রয়েছে মুক্ত ভাবনার অবকাশ। কাঠামো গড়া এবং তা হতে ভবনকে নতুনত্ব প্রদান করে, আবহাওয়া উপযোগী করে আরও বাসযোগ্য কিংবা ব্যবহার্য করে তোলার প্রয়াস দেখা যায় ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থীদের রেস্তোরা কিংবা কমিউনিটি লাইব্রেরী প্রকল্পগুলোয়। চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীদের নগর উন্নয়ন প্রকল্পগুলোতে প্রকাশ পেয়েছে কিভাবে ঝুকিকে সুযোগ হিসেবেও ব্যবহার করা যায় এবং উঠে আসা সমস্যাগুলোকে কিভাবে সমাধানে নিয়ে যাওয়া যায়। উত্তরার স্মার্টসিটি, কারওয়ান বাজার উন্নয়ন কিংবা মধ্যবিত্তের গৃহায়ণ প্রকল্পগুলোর পাশাপাশি তাদের ইন্টেরিয়র ডিজাইন, ল্যান্ডস্কেপ ডিজাইন প্রকাশ করে তাদের পরিণত হওয়ার কথা।
৫ম বর্ষের বিগত সমাপনী প্রকল্পের প্রদর্শনীতে শিক্ষার্থীদের পূর্ণতার গল্প থাকলেও এই প্রদর্শনীটি প্রকৃতপক্ষে তাদের প্রতিনিয়ত বাড়তে থাকা অাগ্রহ এবং সফল পরিণতির ইঙ্গিত বহন করছে। আশাবাদ এটাই, পরবর্তী সেমিস্টারের প্রদর্শনী আরও সাফল্য ও ঔজ্জ্বল্য বয়ে আনুক।