শান্ত-মারিয়াম বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্রীস্মকালীন সেমিস্টারের নবীনবরণ

সমবেত স্বাগত সঙ্গীত, ফুলেল শুভেচ্ছা, আলোকিত মানুষ তথা ভবিষ্যৎ বিনির্মাণের দীক্ষায় পেশাদারিত্ব, মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা, র্যাফেল ড্র ও নানাবিধ আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে গত শনিবার, ৭ জুলাই-২০১৮, রাজধানী উত্তরার জমজম কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত হল অত্র অঞ্চলের প্রথম সৃজনশীল, কর্মমূখী ও সাংস্কৃতিক বিশ্ববিদ্যালয় ‘শান্ত-মারিয়াম ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি’র গ্রীস্মকালীন সেমিস্টার ২০১৮-এর নবীনবরণ অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে শান্ত-মারিয়াম ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ইমামুল কবীর শান্ত ও ভাইস চেয়ারম্যান ডা. আহসানুল কবীর, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. কাজী মোঃ মফিজুর রহমান, ট্রেজারার প্রফেসর শামসুন নাহার, রেজিষ্ট্রার স্থপতি হোসনে আরা রহমান, আইকিউএসি’র পরিচালক অধ্যাপক ড. ইয়াসমীন আহমেদ, প্রক্টর ড. গোলাম মোস্তাফা সহ পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, বিভিন্ন অনুষদের ডিন ও বিভাগীয় প্রধানগণ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সমাজের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার উর্ধতন ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে নবীণদের উদ্দেশ্যে গুরুত্বপূর্ন বক্তব্য রাখেন শান্ত-মারিয়াম ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ইমামুল কবীর শান্ত। তিনি বলেন, “তোমরা বাবা মায়ের কষ্টার্জিত অর্থ যেমন দিচ্ছ, তেমনি এর বিনিময়ে তোমার প্রয়োজনীয় যে শিক্ষা, তা বুঝে নিতে একটুও ছাড় দিবেনা। এ ব্যাপারে কোন সমস্যা হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উর্ধতন থেকে সমগ্র স্তরে; যেথায়ই তুমি যাও, তোমার যেকোন অভিযোগ কিংবা সমস্যা শুনতে তাঁরা বাধ্য। ফলে তোমরা যখনই প্রয়োজন মনে করবে দায়িত্বপ্রাপ্তদের কাছে অবিলম্বে জানাবে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিক-পরিচালক যাই হইনা কেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ কিন্তু তোমরা ছাত্রছাত্রীরাই। তোমাদের মাঝে আমি সন্তান, পরিবার সব কিছুই খুঁজে পাই। ফলে তোমাদের যেকোন সমস্যায় আমার কাছে আসবে ঠিক সেই অধিকার নিয়ে যে অধিকার নিয়ে ছুটে যাও তোমার পিতা-মাতার কাছে।”

গতকাল শান্ত-মারিয়াম ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি’র গ্রীস্মকালীন সেমিস্টারের নবীনবরণ অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ইমামুল কবীর শান্ত বলেন, প্রকৃত শিক্ষা নিয়ে তোমরা মায়ের, দেশের ও পরিবারের সেবায় অবিলম্বে নিজেকে নিয়োজিত কর। এটা তোমার উপর অর্পিত দায়িত্ব। আমি প্রতিনিয়তই অন্তর্দহনে কষ্ট পাই এই মর্মে যে, আমার মা তথা দেশের জন্য আমি তেমন কিছুই করতে পারিনি। যা করেছি বা করছি তা যথেষ্ট নয়, আরো করা উচিত। আমি মনে করি আমার মা তথা দেশের জন্য করা মানেই সৃষ্টিকর্তার জন্য করা। আমি মা মাটি তথা দেশের মধ্যে সৃষ্টি কর্তার স্বরূপ খুঁজে পাই।

জনাব শান্ত বলেন, আমি সেই তরুণ বয়সেই দেশের প্রয়োজনে স্বাধীকার আন্দোলনে অংশগ্রহণ করি এবং দেশ স্বাধীন করে অনুভব করি আসল যুদ্ধতো আমাদের সামনে। তাই প্রথমেই শুরু করলাম সুশিক্ষা নিশ্চিত করার কাজ। এই কাজে আত্মনিয়োগ করে দেখলাম, প্রচলিত যে শিক্ষা তা কর্মমূখী নয়, কাগুজে শিক্ষা। তাই আমি শান্ত-মারিয়াম একাডেমী ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে কর্মমুখী, সৃজনশীল ও সাংস্কৃতিক শিক্ষা বিষয়ে উপযুক্ত শিক্ষাদানে নিয়োজিত হলাম এবং এই শিক্ষা দ্রুত দেশব্যাপি ছড়িয়ে দিতে দূরশিক্ষন শিক্ষা চালু করলাম। কিন্তু একদল স্বার্থান্বেষী মহল তৎকালীন সরকারের মদদে জনকল্যাণমূখী এই শিক্ষা বন্ধ করে দেয়। কিন্তু আমি থামিনি, চক্রান্ত যতই হোক আমি আমার কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছি। বিশেষ করে আমি কারিগরী শিক্ষার সমন্বয়ে এমন এক কর্মমুখী শিক্ষার বাস্তবায়ন নিয়ে কাজ করছি, যার মাধ্যমে দেশের মাদ্রাসাসহ অন্যান্য লক্ষ লক্ষ বেকার তরুণ কর্মমূখী শিক্ষা গ্রহণ করে খুব অল্প সময়েই স্বাবলম্বী হতে পারছে। আমি আশা করি তোমরা আমার চেয়েও ভাল কিছু করবে। বিশেষকরে মা মাটি তথা দেশের জন্য কাজ করবে।

সকাল ১০ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামীক স্ট্যাডিজ বিভাগের প্রধান মোঃ ইসহাকের পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠানের প্রথম পর্ব। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের ডকুমেন্টারি প্রদর্শন ও থিম সং শেষে স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রক্টর ড. গোলাম মোস্তফা সহ ভিসি প্যানেলের উর্ধতনগণ। তারা নবীন শিক্ষার্থীদেরকে নিজেদের একাডেমিক ও পাঠ্য বহির্ভূত সহ সকল ধরনের শিক্ষাদানের ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে জীবনের বহুমুখী শিক্ষা বিনিময়ের কেন্দ্রবিন্দু। তাই আমরা তোমাদের জন্য সদা প্রস্তুত।

সবশেষে র্যাফেল ড্র অনুষ্ঠিত হয়। এই পর্বে প্রথম পুরস্কার অর্জনকারির ড্র পরিচালনা করেন শান্ত-মারিয়াম ফাউন্ডেশনের ভাইস-চেয়ারম্যান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টিবোর্ডের সদস্য ডা. আহসানুল কবীর। এরপর ধন্যবাদ জ্ঞাপন ও মধ্যাহ্ন ভোজের মধ্য দিয়ে শেষ হয় নবীন ছাত্র-ছাত্রীদের বরণ করে নেয়ার এই মনোজ্ঞ অনুষ্ঠান।

News & Events